নগর দারিদ্র্য মোকাবিলায় ভাসমান মানুষের জন্য দরকার পৃথক কর্মসূচি
নগর দারিদ্র্য পল্লি দারিদ্র্যের চেয়ে তীব্র। তাই এটা মোকাবিলা করা সহজ নয়। আর এর সঙ্গে আছে পুনর্বাসন ছাড়াই নির্বিচারে বস্তি উচ্ছেদ ও নোংরা রাজনীতির চ্যালেঞ্জ। এ অবস্থায় নগর দারিদ্র্য মোকাবিলা করতে হলে ভাসমান মানুষকে নিয়ে পৃথক কর্মসূচি নিতে হবে।
রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টারে গতকাল রোববার এক কর্মশালায় আলোচকেরা এ কথা বলেন। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনে বেসরকারি সংস্থা দুস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটি প্রকল্পের সমাপনী উপলক্ষে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। নগর দারিদ্র্য মোকাবিলার লক্ষ্য নিয়ে ২০০৯-১৬ পর্যন্ত ‘ডিএসকে-সিঁড়ি’ নামে এ প্রকল্পটি নগরের ৩০ হাজার অতিদরিদ্র পরিবারের ওপর বাস্তবায়িত হয়।
কর্মশালায় প্রকল্পের ওপর গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ বিনায়ক সেন। এতে তিনি প্রকল্প শুরুর আগে ও পরে ঢাকার কয়েকটি বস্তি এলাকায় অতিদারিদ্র্যের হার পরিবর্তনের চিত্র তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বিশ্লেষণ করেন। আলোচনায় তিনি বলেন, ‘আমরা দারিদ্র্য মূল্যায়ন করি কেবল খাদ্য গ্রহণের নিরিখে। কিন্তু গুণগত শিক্ষা, পুষ্টি, বাসস্থান ও নিরাপদ পরিবহনের ব্যবস্থা দরিদ্র মানুষের কাছে হাজির করাটা আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল মধ্য আয়ের দেশ নই, মধ্যবিত্তের দেশে পরিণত হতে চাই।’
বিনায়ক সেনের গবেষণাপত্রের ওপর আলোচনা করেন সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মফিজুল ইসলাম। তিনি যেসব প্রতিষ্ঠান নগরের দরিদ্র মানুষ নিয়ে কাজ করছে, তারা ঠিকমতো উপকারভোগী চিহ্নিত করতে পারছে কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন। কারণ নগরের দরিদ্র মানুষের বড় একটা অংশ ভাসমান। তিনি যেকোনো উপায়ে হোক, রিকশাওয়ালা, পোশাকশ্রমিক, ভিক্ষুকদেরও এসব প্রকল্পে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান মিহির কান্তি মজুমদার নগর দারিদ্র্য নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর আহ্বান জানিয়ে ‘ক্ষুদ্রঋণ’, ‘উপকারভোগী’ এসব শব্দ ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন দুস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহফুজা খানম। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী মাসুদুল কাদের।
Source Link: https://goo.gl/gQDpLw
Source: The Daily Prothom Alo
Updated Date: 9th March, 2017