চট্টগ্রামে বাপা’র অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস

প্রকাশ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ২১:৩৩ | আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ২১:৩৬

 

হালদা নদী রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা না থাকায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূসকে ‘তুলোধুনো’ করেছেন তার নিজ জেলা চট্টগ্রামের পরিবেশবাদী নেতারা।তাদের মতে, হালদা রক্ষায় এগিয়ে আসার মতো সুযোগ ও সামর্থ্য ড. ইউনূসের ছিল। কিন্তু হালদার জন্য তিনি কিছুই করেননি। হালদা রক্ষায় এগিয়ে এলে ড. ইউনূস আরেকবার নোবেল পেতেন বলে অভিমত কারও কারও।

 চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) একটি অনুষ্ঠানে প্রায় সব বক্তাই ইউনূসের কড়া সমালোচনা করেছেন। শুক্রবার বিকালে ‘হালদা নদীর বর্তমান প্রেক্ষাপট এবং করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাপা।  

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী শুরুতেই হালদা নদী ও চট্টগ্রাম নিয়ে চট্টগ্রামেরই সন্তান স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদ ও নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের কোনো মাথাব্যথা নেই বলে অভিযোগ করেন।  তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূস লাখ লাখ টাকার ডলার-বাণিজ্য করে নোবেল পুরস্কার পান। তিনি কেন হালদা নিয়ে কথা বলেন না? হালদা নিয়ে কোনো পরিকল্পনাও করেন না। চট্টগ্রাম শহরে যতগুলো কারখানা আছে এরমধ্যে একটি কারখানারও ওয়াটার ট্রিটমেন্ট ব্যবস্থা নেই। বর্তমান কর্ণফুলি সেতু করার কারণে দুই পাশে পলিমাটি জমে যাওয়ায় জোয়ারের পানি কর্ণফুলি দিয়ে উঠতে না পেরে হালদা নদীতে মিশে। কর্ণফুলির লবণাক্ত পানি হালদার মিঠা পানিতে মিশার কারণে হালদার প্রায় ৬০-৭০ ভাগ মাছের পোনা নষ্ট হয়।’

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হালদা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্বিবিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া। এতে হালদা দূষণের বিভিন্ন কারণ ও দূষণ থেকে হালদা নদীকে রক্ষার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন তিনি।

সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘হালদা বাংলাদেশের গর্ব। বাংলাদেশে গর্ব করার অনেক কিছু আছে যার মধ্যে অন্যতম হালদা নদী। এই হালদা নদী চট্টগ্রামের মানুষের গর্ব। অথচ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ এই হালদা নদীকে পর্যন্ত ভুলে গেছেন। হালদাকে যারা ভালোবাসে; বাংলাদেশের মাটি ও মানুষকে ভালোবাসে তারা সবাই এগিয়ে এলে হালদার সমস্যা সমাধান করা কোনো কঠিন বিষয় না।’ সরকার হালদা নিয়ে আন্তরিক বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আলী বলেন, ‘হালদা জাতীয় সম্পদ। এটা বিশ্বের অন্যতম নদী যেখানে জোয়ার ভাটার পানি আসা সত্ত্বেও মাছের পোনা সংগ্রহ করা হয়। এটি সংরক্ষণে কাজ করলে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ হয়তো আরও একটি নোবেল পেতেন।’

সভাপতির বক্তব্যে ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও হালদা নদী রক্ষা কমিটির উপদেষ্টা প্রফেসর সিকান্দার খান বলেন, ‘হালদার প্রতি আমাদের সমর্থন আছে। আমরা অনেক প্লান তৈরি করেছিলাম। কিন্তু চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কোনো দিন এই প্লান ধরেনি এবং কোনোদিন পৃষ্ঠাও উল্টাননি।’  তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূস যেমন নোবেল নিয়ে ব্যস্ত তেমনি চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ ব্যস্ত উড়াল সেতু নিয়ে। অথচ ইউনূস চাইলে হালদা ও চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উন্নত দেশ ও প্রতিষ্ঠানকে বুঝিয়ে অনুদান এনে সাহায্য সহযোগিতা করতে পারতেন।’

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী ফরিদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও রূপালী ব্যাংকের পরিচালক আবু সুফিয়ান, টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি ও এনটিভি চট্টগ্রামের ব্যুরো প্রধান সামশুল হক হায়দরি, মহসিন কলেজের অধ্যাপক ইদ্রিস আলী ও বাপা চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ড. আবু নোমান।

 

 

Source Link: https://goo.gl/sxkxBS

Source: Dainik AmaderShomoy

Updated Date: 9th March, 2017

Related Publications

Yunus Social Business Week launched in China...

Published Date: 15th October, 2015

Grameen China to set up branch in Shenzhen ...

Published Date: 16th October, 2015