রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নিরপক্ষে, আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবী
২৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৯:৩৫ | আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ২২:৪২ | অনলাইন সংস্করণ
চলমান রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিকে চিঠি দিয়েছেন ড. মুহম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইউনূস সেন্টার থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতিগত নিধন ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধতূল্য একটি মানবীয় বিপর্যয় মিয়ানমারে বিস্তৃতি লাভ করছে। গত দুই মাসে মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক রাখাইন প্রদেশে যে সামরিক আগ্রাসন চালানো হচ্ছে তাতে শত শত রোহিঙ্গা নাগরিক হত্যার শিকার হচ্ছে। ৩০ হাজারেরও বেশী মানুষ এর ফলে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে, নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, বেসামরিক মানুষদের নির্বিচারে আটক করা হচ্ছে, শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে।
আরো ভয়ের ব্যাপার, মানবিক সাহায্য সংস্থাগুলোকে সেখানে প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হচ্ছে, যার ফলে আগে থেকেই চরম দরিদ্র এই এলাকাটিতে মানবীয় সংকট ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। হাজার হাজার মানুষ নিকটবর্তী বাংলাদেশে পালিয়ে যাচ্ছে যেখান থেকে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
জাতিসংঘ রিফিউজি হাইকমিশনের বাংলাদেশ কার্যালয় প্রধান জন ম্যাককিসিক মিয়ানমার সরকারকে জাতিগত নিধন পরিচালনার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন। মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংহি লী রাখাইন রাজ্যে প্রেবেশের উপর বিধিনিষেধ আরোপকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিযোগ করেছেন।
অং সান সু’কি’র কাছে বারবার আবেদনের পরও তিনি রোহিংগাদের পূর্ণ ও সম-নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে কোন উদ্যোগ না নেয়ায় আমরা হতাশ হয়েছি। সু’কি মিয়ানমারের নেত্রী এবং দেশটিকে সাহস, মানবিকতা ও সমবেদনার সাথে পরিচালনা করার দায়িত্ব তারই।
মিয়ানমার সরকারকে মানবিক সহায়তার উপর সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবার জন্য উদ্বুদ্ধ করার জন্য সম্ভাব্য সকল উদ্যোগ নিতে আমরা জাতি সংঘের নিকট সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি, যাতে মানুষ জরুরী সহায়তা পেতে পারে। সাংবাদিক ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদেরও সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেয়া উচিত এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনের উদ্দেশ্যে একটি নিরপক্ষে, আন্তর্জাতিক তদন্ত পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন।
একই সাথে জাতি সংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি জরুরী এজেন্ডা হিসেবে সংকটটিকে উপস্থাপনের জন্য আমরা নিরাপত্তা পরিষদকে বিশেষভাবে আহ্বান জানাচ্ছি এবং জাতি সংঘ মহাসচিবকে জরুরী ভিত্তিতে সামনের সপ্তাহগুলোতে মিয়ানমার পরিদর্শণ করতে অনুরোধ করছি। বর্তমান মহাসচিবের পক্ষে এটা সম্ভব হলে আমরা তাঁকেই সেখানে যেতে অনুরোধ করবো; অন্যথায় নতুন মহাসচিবকে জানুয়ারীতে দায়িত্ব নেবার পরই এ বিষয়টিকে তাঁর কর্ম-তালিকায় অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করতে অনুরোধ জানাবো।
স্বাক্ষরকারীদের নাম:
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস
নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০০৬ জয়ী
হোসে রামোস-হরতা
নোবেল শান্তি পুরস্কার ১৯৯৬ জয়ী
আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু
নোবেল শান্তি পুরস্কার ১৯৮৪ জয়ী
মেইরিড মাগুইর
নোবেল শান্তি পুরস্কার ১৯৭৬ জয়ী
বেটি উইলিয়াম্স
নোবেল শান্তি পুরস্কার ১৯৭৬ জয়ী
অসকার অ্যারিয়াস
নোবেল শান্তি পুরস্কার ১৯৮৭ জয়ী
জোডি উইলিয়াম্স
নোবেল শান্তি পুরস্কার ১৯৯৭ জয়ী
শিরিন এবাদী
নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০০৩ জয়ী
তাওয়াক্কল কারমান
নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০১১ জয়ী
লেইমাহ বোয়ি
নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০১১ জয়ী
মালালা ইউসাফজাই
নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০১৪ জয়ী
স্যার রিচার্ড জে. রবার্টস
চিকিৎসা শাস্ত্রে ১৯৯৩ সালে নোবেল পুরস্কার জয়ী
এলিজাবেথ ব্ল্যাকবার্ন
চিকিৎসা শাস্ত্রে ২০০৯ সালে নোবেল পুরস্কার জয়ী
এমা বোনিনো
ইতালির প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রিচার্ড কার্টিস
এসডিজি সমর্থক, চলচ্চিত্র কাহিনীকার, প্রযোজক ও পরিচালক
আলা মুরাবিত
এসডিজি সমর্থক, লিবীয় নারী অধিকার প্রবক্তা
অ্যারিয়ানা হাফিংটন
দি হাফিংটন পোস্ট-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক
স্যার রিচার্ড ব্র্যানসন
ব্যবসায়ী নেতা ও সমাজসেবী
পল পোলম্যান
ব্যবসায়ী নেতা
মো ইব্রাহীম
উদ্যোক্তা ও সমাজসেবী
জোকেন জাইট্জ
ব্যবসায়ী নেতা ও সমাজসেবী
কেরী কেনেডী
মানবাধিকার কর্মী
রোমানো প্রদি
ইতালির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী
Source Link: https://goo.gl/u2NDX5
Source: Dainik AmaderShomoy
Updated Date: 8th March, 2017